গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোটারদের চোখের ভাষা পড়ে কৌশলে তাকে ভোট দেয়ার দাবি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভোট বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার।
বেলা একটার দিকে গাজীপুর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এক সম্মেলনে এই দাবি জানান হাসান। শতাধিক কেন্দ্র থেকে এজেন্টে বের করে দেয়া এবং মারধর করার অভিযোগ এনে এই দাবি জানাতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করার কথাও জানান তিনি।
অবশ্য নির্বাচন বন্ধের দাবি জানালেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকার কথাও বলেন বিএনপির এই প্রবীণ নেতা।
সাংবাদিকরা জানতে চান, ভোট বন্ধ হলে, শেষ পর্যন্ত কীভাবে থাকবেন?
জবাবে হাসান বলেন, ‘আমি নির্বাচন বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। যদি বন্ধ না হয়, তাহলে আমি শেষ পর্যন্ত থাকব। শেষ পর্যন্ত না থাকলে সরকারের আসল চরিত্র বোঝানো যাবে না।’
সকাল আটটায় টঙ্গীর বছিরউদ্দিন উদয়ন একাডেমি কেন্দ্রে ভোট দিয়ে ১০টি কেন্দ্র থেকে তার এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগ করেছিলেন হাসান।
তবে বেলা ১১টার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের নেতা রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন শতাধিক কেন্দ্রেই এই ঘটনা ঘটেছে।
আরও ঘণ্টাখানেক পর ঢাকাটাইমসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে হাসান দাবি করেন, ভোটাররা কৌশলে তাকেই ভোট দিচ্ছে। বলেন, ‘আমি শেষ দেখতে চাই। আমি নির্বাচনে থাকব। আমি ভোটারদের চোখের ভাষা বুঝতে পারি। তারা কৌশল অবলম্বন করছে।’
সেই কৌশল কী, এমন প্রশ্নে বিএনপি নেতা বলেন, ‘সেটা আপনি না বুঝলেও আমি বুঝি। আমি কত বছর ধরে রাজনীতি করি আপনার জানা আছে? এদের চোখ দেখলেই আমি বলতে পারি ভোট দিছে কি দেয় নাই। একটা কথা আছে ইংরেজিতে ফেইস ইজ দ্যা ইনডেক্স অফ মাইন্ড।’
তবে এক ঘণ্টা পরেই ভোট বন্ধের দাবি জানিয়ে হাসান বলেন, ‘পুলিশ সদস্যরা পোশাকধারী এবং সাদা পোশাকে এবং ছাত্রলীগ যুবলীগের কিছু ভাইয়েরা আমাদের নেতাকর্মীদের মারধর করেছে। পুলিশ গ্রেপ্তার করে এক বিভীষিকাময় পরিবেশ সৃষ্টি করছে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে ধানের শীষের প্রার্থী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুষ্ঠ নির্বাচন করার ব্যাপারে অনেক কথাই বলেছিলেন, তিনি একটি কথাও রাখতে পারেননি। নূন্যতম বিবেক থাকলে তার এই পদ থেকে অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। গাজীপুরে আজ কি ঘটেছে তা আল্লাহ দেখেছেন, আর আপনারা সাংবাদিকরা সাক্ষী।’
‘এই নির্বাচনে ভোটের লোভে আল্লাহ যেন আমার মুখ থেকে একটা মিথ্যা কথাও না বের করায়। এমনটা আমরা আশা করিনি।’
সংবাদ সম্মেলন শেষ করেই রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের দিকে যান হাসান উদ্দিন সরকার।